FAQ
মানসিক স্বাস্থ্য হল এমন একটি অবস্থা যেখানে প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজের সম্ভাবনাকে উপলব্ধি করতে পারে, জীবনের দৈনন্দিন চাপকে মোকাবেলা করতে পারে, উৎপাদনশীলভাবে কাজ করতে পারে এবং তার সমাজে অবদান রাখতে সক্ষম হয়।
এটি এমন এক ধরণের সেবা যার দ্বারা মানুষ আত্মসচেতন হওয়ার মাধ্যমে নিজের আচরণ ও মনোভাবের কাক্সিক্ষত পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়।
কৈশোরকালীন সময়ে কিশোর-কিশোরীদের মাঝে বিভিন্ন ধরণের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। পরিবার, বন্ধু এবং সমবয়সীদের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও নানা ধরণের ভিন্নতা প্রকাশ পায়। কারণ, প্রত্যেক কিশোর- কিশোরীর মনোসামাজিক বিকাশ ভিন্ন; এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে জিনগত বৈশিষ্ট্য, মস্তিষ্কের বিকাশ, অভিজ্ঞতা ছাড়াও চারপাশের পরিবেশ (পরিবার, বন্ধু, সমাজ, কৃষ্টি) ইত্যাদিও বিশেষভাবে প্রভাব বিস্তার করে। মনোসামাজিক পরিবর্তনের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের মাঝে আতœ-নির্ভরশীলতা এবং পরিণত বয়সের বৈশিষ্ট্যগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়।
- ব্যক্তিগত পরিচয় অনুস›ধান করা
- অধিক স্বাধীনচেতা মনোভাব
- অধিক দায়িত্ব অন্বেষণ করা
- ঝুঁকি-গ্রহণমূলক আচরণ
- সম্পর্কজনিত বিষয়
আবেগ হলো এক ধরনের মানসিক অবস্থা যা চিন্তন, অনুভূতি, আচরণগত প্রতিক্রিয়া এবং আনন্দ/বেদনার মাত্রার সাথে সম্পর্কিত। আবেগের ফলে আমাদের নানা রকম শারীরিক, আচরণগত এবং চিন্তার পরিবর্তন হয়।
- সুঃখ
- দুঃখ
- রাগ
- ভয়
- নিম্ন আত্মসম্মানবোধ
- আবেগীয় সমস্যা (অত্যধিক রাগ, নিরাপত্তাহীনতা,উদ্বেগ, চাপ, হতাশা, বিষন্নতা)
- প্রত্যাহার মূলক মনোভাব
- বিদ্রোহী আচরণ
দৈনন্দিন জীবনে আমাদের অনেক নেতিবাচক ঘটনার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। ফলে আমরা নানা ধরনের আবেগীয় সংকটের সম্মূখীন হই, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কি করতে হবে, কিভাবে করতে হবে তা নিয়ে আমরা অনিশ্চয়তা ও দ্বিধায় ভূগি। আবেগ ব্যবস্থাপনা ব্যক্তিকে আত্ম নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করবে, নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে এবং এ ধরনের পরিস্থিতিতে কিভাবে প্রতিক্রিয়া করতে হবে তাতে সহায়তা করবে। ব্যক্তি তার গুনাবলীগুলো উপলদ্ধি করতে পারবে এবং ফলপ্রসূভাবে কাজ করতে পারবে। আত্ম-বিশ্বাস, আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা এবং আত্মসম্মানবোধ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
- নিজের অনুভূতি, প্রতিক্রিয়া এবং মানসিক অবস্থার প্রতি খেয়াল করা এবং বোঝা
- নিজের অনুভূতি ও আচরণের দায়িত্ব নেওয়া
- নিজের সফলতার উপর ফোকাস করা এবং এর জন্য নিজেকে প্রশংসা করা
- প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় অতিবাহিত করা
- মুক্ত মনা হওয়া ও চারপাশে যা ঘটছে তা গ্রহণ করা
- বিশ্বস্ত কারো সাথে মনের কথা শেয়ার করা
- পছন্দনীয় ইতিবাচক কাজ করা (পছন্দের বই পড়া, গান শোনা)
- ডায়েরী লেখা (ঘটে যাওয়া ঘটনা, নিজের চিন্তা ও অনুভূতি লেখা)
- জীবনের ইতিবাচক ঘটনার প্রতি ফোকাস করা
- ব্যায়াম করা
- নাক দিয়ে গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে প্রশ্বাস ছাড়
আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (ASA) এর মতে, “উদ্বেগ হলো এক ধরনের আবেগ যাকে তীব্র অনুভূতি, দুঃশ্চিন্তা এবং রক্তচাপ বৃদ্ধি করার মতো শারীরিক পরিবর্তনগুলো দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।” স্বাভাবিক মাত্রায় উদ্বেগের অনুভূতি থাকা ভালো, যেটা ব্যক্তিকে কোন বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে প্রস্তুত ও সহায়তা করে। তবে উদ্বেগ বেশি মাত্রায় থাকলে ব্যক্তির জন্য ক্ষতিকর হয় ফলে ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবন যাত্রার মান ব্যহত হয় এবং ব্যক্তির মানসিক অবস্থা হুমকির সম্মুখীন হয়।
- অত্যধিক রাগ
- বিরক্ত বোধ
- মনোযোগের অসুবিধা
- অস্থিরতা
- যেকোন পরিস্থিতি খুব বিপজ্জনক মনে করা
- খারাপ কিছু ঘটবে বলে আশংকা
- নেতিবাচক চিন্তা
- হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া
- রক্ত চাপ বেড়ে যাওয়া
- বমি বমি ভাব
- ঘাম হওয়া
- মুখ শুকিয়ে যাওয়া
- ডায়রিয়া
- পেট ব্যাথা, মাথা ব্যাথা
- শ্বাস কষ্ট
- শ্বাস কষ্ট
- ঘুম না হওয়া বা ঘুমের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া
- পরিস্থিতি এড়িয়ে চলা
- খাবারে অরুচি বা অত্যধিক পরিমাণে খাবার গ্রহণ করা
- অলসতা বা অনীহা
- মাদক দ্রব্য গ্রহণ করা/মদ্যপান করা
- প্রত্যাহারমূলক আচরণ
- চাহিদা ও যোগানের মধ্যে পার্থক্য থাকা
- অবাস্তব প্রত্যাশা
- আত্ম নিয়ন্ত্রণের অভাব
- প্রত্যাখ্যাত ও বিচ্ছিন্ন হওয়ার ভয়
- তুলনা করা
- কর্মক্ষেত্র ও স্কুলের কাজের চাপ
- ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি
- অর্থনৈতিক সমস্যা
- অসুস্থতা
- নেতিবাচক অভিজ্ঞতা ইত্যাদি
১) নিজের চিন্তা, অনুভূতি ও আচরণের প্রতি খেয়াল করা এবং এগুলোর দায়িত্ব গ্রহণ করা ২) বিশ্বস্ত কারো সাথে মনের কথা শেয়ার করা ৩) নিজেকে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি থেকে কিছু সময়ের জন্য দূরে রাখা যেমন- ১০-১৫ মিনিট হাঁটা, এক কাপ চা তৈরি করে খাওয়া, গোসল করা ইত্যাদি ৪) নিজের সাথে ইতিবাচক কথা বলা ৫) যে পরিস্থিতি বা ঘটনা আমাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে তা মেনে নেওয়া ৬) পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো ৭) নিজের পছন্দের ইতিবাচক কাজ করা ৮) পুষ্টিকর খাবার খাওয়া ৯) ভালো স্মৃতি বা সফলতার কথা ভাবা ১০) নিজেকে পুরস্কৃত করা ও নিজের প্রশংসা করা ১১) দৃঢ়তার সাথে “না” বলতে শেখা ১২) ব্যায়াম করা ১৩) নাক দিয়ে গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে প্রশ্বাস ছাড়া ১৪) প্রয়োজনে মনোবিজ্ঞানীর শরণাপন্ন হওয়া
ব্যক্তির চাহিদা এবং ক্ষমতার মধ্যে দ¦›দ্ব তৈরি হওয়ার ফলে ব্যক্তির নিজের মধ্যে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তাকে মানসিক চাপ বলা হয়। অর্থাৎ আমরা যে কাজটি যেভাবে করতে চাই তা যখন পরিবেশ ও পরিস্থিতির কারণে করতে পারি না তখন আমরা মানসিকভাবে চাপ অনুভব করে থাকি।
মানসিক চাপের ফলে শারীরিক, আবেগীয়, আচরণগত বিভিন্ন পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। নিম্নে কিছু পরিবর্তন উল্লেখ করা হল-
kvixwiK cwieZ©bmg~n |
Av‡eMxq cwieZ©bmg~n |
AvPiYMZ cwieZ©bmg~n |
eyK ai-di Kiv |
wei³ †eva |
Nyg bv nIqv |
i³ Pvc †e‡o hvIqv |
AZ¨waK ivM |
gv`K `ªe¨ MÖnY Kiv/g`¨cvb Kiv |
Bbmgwbqv (Awb`ªv) |
welYœZv |
Ag‡bv‡hvMxZv |
gv_ve¨_v |
D‡ËRbv |
AjmZv ev Abxnv |
ey‡K e¨_v |
nZvkv |
AKvi‡Y nvuUvnvuwU Kiv |
k¦vm Kó |
Kó |
wPrKvi †PuPv‡gwP Kiv |
ewg ewg fve |
AvZ¥wek¦v‡mi Afve |
KvbœvKvwU Kiv |
Wvqwiqv |
Aciva-‡eva |
fy‡j hvIqv |
†cU e¨_v |
Aw¯’iZv |
†`vlv‡ivc Kiv |
Nvg nIqv |
Lvev‡i AiywP ev AZ¨waK cwigv‡Y Lvevi MÖnY Kiv |
- বাইরে হাঁটতে যাওয়া
- বিশ্বস্ত বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে সুন্দর সময় অতিবাহিত করা
- বিশ্বস্ত কারো সাথে মনের কথা শেয়ার করা
- পছন্দের বই পড়া, গান শোনা
- ডায়েরী লেখা
- ব্যায়াম করা
- আয়নায় নিজেকে দেখা
- হাত-মুখ ধৌত করা বা গোসল করা
- প্রার্থনা করা
- পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো
- প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় অতিবাহিত করা
- নাক দিয়ে গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে প্রশ্বাস ছাড়া
রাগ হচ্ছে এক ধরনের মৌলিক অনুভূতি যার উৎপত্তি ঘটে কষ্ট, হতাশা,বিরক্তি, আশাহত হওয়া ইত্যাদি থেকে। রাগ প্রকাশের মাত্রা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। সামান্য বিরক্তি প্রকাশমূলক শব্দ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কার্যাবলী সম্পাদনের মাধ্যমে রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে। রাগ আমাদের স্বাভাবিক আবেগ। সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করলে এই আবেগ ক্ষতিকর নয়।
- Passive behavior pattern বা নিষ্ক্রিয় আচরণের ফলে
- সামাজিক সমর্থনের অভাব
- আবেগীয় বিশৃঙ্খলা- বিষন্নতা, উদ্বেগ ইত্যাদি
- মানসিক আঘাতজনিত ঘটনা
- মানসিক চাপ
- আঘাত/ অপমান করে কথা বললে
- হুমকির সম্মুখীন হলে
- নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে বাধাগ্রস্ত হয়ে হতাশ হওয়ার ফলে
- অসম্মানিত হওয়ার ফলে
- অধিকার খর্ব হলে ইত্যাদি
- শারীরিক ক্ষতি
- মানসিক ক্ষতি
- ঈধৎববৎ বা পেশাগত ক্ষতি
- পড়ালেখার ক্ষতি
- সম্পর্কের ক্ষতি
- বিষন্নতায় ভোগা
- ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তা করা
- ঘুমের সমস্যা
- নেশায় জড়িয়ে পরা
- একই কাজ বারবার করার প্রবনতা
- ঝবষভ-যধৎস বা নিজের ক্ষতি করা
- রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি
১) প্রতিক্রিয়া প্রকাশের আগে কিছুটা সময় নেয়া
২) ১-১০ পর্যন্ত ধীরে ধীরে গুণতে থাকা
৩) অংংবৎঃরাব ভাবে কথা বলা( কোন প্রকার ক্ষতিকারক আচরণ এবং অন্যকে অসম্মানজনক আচরণ প্রদর্শন না করে নিজের চিন্তা ও অনুভূতিকে ন¤্রভাবে প্রকাশ করা)
৪) পর্যাপ্ত ঘুম
৫) ডায়েরী লেখা
৬) শরীর চর্চা বা ব্যায়াম করা
৭) নিঃশ্বাসের ব্যায়াম করা
৮) পরিস্থিতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া
৯) মনোচিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া
পুষ্টি হলো একটি প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়াতে খাদ্যবস্তু খাওয়ার পরে পরিপাক হয় এবং জটিল খাদ্য উপাদানগুলো ভেঙ্গে সরল উপাদানে পরিণত হয়। মানবদেহ এসব সরল উপাদান শোষণ করে নেয়। এসব খাদ্য উপাদান মানবদেহের শক্তি ও যথাযথ বৃদ্ধি নিশ্চিত করে, মেধা ও বুদ্ধি বাড়ায়, রোগ প্রতিরোধ করে, রোগ-ব্যাধি থেকে তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে সাহায্য করে এবং সর্বোপরি কর্মক্ষম করে।
যেসব খাদ্য খেলে শরীরে তাপ ও শক্তি উৎপাদিত হয়, দেহের গঠন ও বৃদ্ধি হয়, শরীর সবল, কর্মক্ষম থাকে, তাকে পুষ্টিকর খাদ্য বলে। খাদ্য ও পুষ্টি একে অপরের সাথে জড়িত। প্রতিটি খাদ্য অবশ্যই পুষ্টিকর ও নিরাপদ হতে হবে। নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করলে শরীর ও মন ভালো থাকে, মনে প্রফুল্লতা আসে এবং পড়াশোনা ও কাজে মনোযোগ বাড়ে। মনে রাখতে হবে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ না করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সংজ্ঞা অনুযায়ী ১০-১৯ বছর বয়স সীমাকে কৈশোরকাল (adolescence) বলে। এ সময় ছেলে-মেয়ে উভয়েরই স্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয়। দ্রুত ওজন ও উচ্চতার বৃদ্ধি এবং বুদ্ধির বিকাশ ঘটে। তাই কিশোর-কিশোরীদের সঠিক বৃদ্ধির জন্য এসময় পরিমাণমতো পুষ্টিকর ও সুষম খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন। সঠিক পুষ্টি নিয়ে বেড়ে উঠলে কিশোর-কিশোরীদের মেধা ও বুদ্ধির বিকাশ হয়। লেখাপড়ায় মনোযোগ, ভালো ফলাফল এবং কাজ করার সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
মানবদেহকে সুস্থ-সবল রাখার জন্য খাদ্য অপরিহার্য। খাদ্য বলতে সেই সকল জৈব উপাদানকে বোঝায় যেগুলো মানবদেহ গঠনে ভূমিকা রাখে, ক্ষয়পূরণ করে, শক্তি বৃদ্ধিসহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। মানুষ খাদ্য থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে।
ওজন ও উচ্চতা পরিমাপক যন্ত্র, সমতল ও সুবিধাজনক জায়গায় সেট করতে হবে। ওজন পরিমাপের সময় যথাসম্ভব স্বল্প কাপড় পরিধান করতে হবে এবং উচ্চতা পরিমাপের সময় জুতা/স্যান্ডেল খুলে কাঁধ সোজা রেখে সামনের দিকে তাকিয়ে উচ্চতা পরিমাপ করতে হবে।
বিএমআই নির্ণয়ের সূত্রঃ
কিশোর/কিশোরীর ওজন (কেজি)
বিএমআই = -----------------------------------------------
{কিশোর/কিশোরীর উচ্চতা (মিটার) ২}^২
সময় |
তাপ ও শক্তি উৎপাদনকারী খাদ্য (শর্করা জাতীয় খাবার- ভাত, রুটি, চিড়া, মুড়ি, আলু, মিষ্টি আলু) |
শরীরের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধিকারক খাদ্য (আমিষ জাতীয় খাবার- ডিম, মাছ, মাংস, দুধ, ডাল ও বিচি জাতীয় খাবার) |
রোগ প্রতিরোধকারী খাদ্য (ভিটামিন ও খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ খাবার- রঙ্গিন শাক অথবা সবজি, দেশি মৌসুমী ফল) |
সকালের খাবার |
মাঝারি সাইজের ২/৩টি রুটি অথবা ২টি পরোটা অথবা ১ বাটি ভাত |
১টি ডিম অথবা ১ বাটি ডাল |
১ বাটি সবজি (২/৩ রকম সবজি মিশিয়ে) অথবা সবজি ভাজি (পটল ভাজি, পেঁপে ভাজি ইত্যাদি) |
মধ্য-সকালের নাস্তা |
বাড়িতে তৈরি নাস্তা জাতীয় খাবার (চিড়া/মুড়ি+গুড়) ও পাকা কলা |
যেকোনো দেশি মৌসুমী ফল (আম, কাঁঠাল, পেঁপে, আনারস ইত্যাদি)। ঋতুভেদে যেসব ফল সহজেই আমরা পাই। |
|
দুপুরের খাবার |
২/৩ বাটি ভাত |
১ বাটি মাঝারি ঘন ডাল ও ১ টুকরা (মাঝারি সাইজের) মাছ/মাংস/কলিজা |
১ বাটি শাক (লাল শাক, কচু শাক, পুঁই শাক) অথবা সবজি। |
বিকালের নাস্তা |
১ গ্লাস দুধ অথবা দুধ দিয়ে তৈরি ঘন যেকোনো খাবার (ফিরনি/সেমাই/ পায়েস/ পিঠা/দই ইত্যাদি) |
যেকোনো দেশী মৌসুমী ফল। ঋতুভেদে যেসব ফল সহজেই আমরা পাই। |
|
রাতের খাবার |
২/৩ বাটি ভাত |
১ বাটি ঘন ডাল (যদি সম্ভব হয় ১ টুকরা মাছ/মাংস) |
১ বাটি শাক অথবা সবজি। |
*১ বাটি = ২৫০ মি.লি. (১ পোয়া), ১ গ্লাস = ২৫০ মি.লি. (১ পোয়া)
- সুষম খাবার, যেমন - শর্করাজাতীয় খাবার (ভাত, রুটি, মুড়ি, চিনি, গুড়, মধু, আলু, চিড়া ইত্যাদি), আমিষজাতীয় খাবার (ডিম, দুধ, মাছ, মাংস, ডাল, বাদাম, বিচি ইত্যাদি), আয়রনসমৃদ্ধ খাবার (মাংস, কলিজা এবং গাঢ় সবুজ শাক-সবজি), ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার (কলিজা, পাকা পেঁপে, আম, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, ছোট মাছ, ডিম, সবুজ শাক-সবজি ও হলুদ রঙের ফলমূল) খাওয়া
- প্রতিদিন ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার খাওয়া
- আয়োডিনসমৃদ্ধ খাবার (সামুদ্রিক মাছ এবং সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার শাক-সবজি) এবং আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়া
- প্রতিদিন ১০-১২ গ্লাস পানি পান করা
- চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ অনুযায়ী কিশোরীদের আয়রন-ফলিক অ্যাসিড (ওঋঅ) ট্যাবলেট খাওয়া (প্রতি সপ্তাহে ১টি করে খাবে)
- প্রত্যেক কিশোর-কিশোরীকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ছয়মাস পর পর কৃমিনাশক বড়ি গ্রহণ করা
- খাবার খাওয়ার আগে ও পরে সাবান এবং নিরাপদ পানি দিয়ে হাত ধোয়া
- স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহার করা এবং জুতা বা স্যান্ডেল পরে টয়লেটে যাওয়া
- মাসিকের সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। মনে রাখতে হবে যে, এ সময় সব ধরনের খাবার খাওয়া যায় এবং সব স্বাভাবিক কাজকর্ম করা যায়
- দেরিতে বিয়ে ও দেরিতে গর্ভধারণ করা (১৮ বছরের পরে)
- কিশোরীকে টিডি (টিটেনাস-ডিপথেরিয়া) টিকার ৫টি ডোজ সম্পূর্ণ করা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে (১৯৪৮), স্বাস্থ্য শুধুমাত্র রোগ বা দুর্বলতার অনুপস্থিতিই নয় বরং এমন একটি অবস্থা যেখানে
পরিপূর্ণ শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক সুস্থতা বিদ্যমান।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী, ১০-১৯ বছর হচ্ছে কৈশোরকাল। শৈশব ও যৌবনের সন্ধিক্ষণে দ্রুত ও গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সময়কালই কৈশোর হিসেবে ধরা হয়। এটি জীবনের এমন একটি সময় যখন মানুষ শিশু বা বয়স্ক, কোনটাই নয়। কৈশোরকালে মানুষের জীবনে অনেক রকম শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয়। এছাড়াও কৈশোরকালে সামাজিক প্রত্যাশা ও ধারণা পরিবর্তিত হয়। এই সময়ে সূক্ষ্ম ও বিমূর্ত বিষয় নিয়ে চিন্তা করার ক্ষমতা ও আত্ম-সচেতনতা তৈরি হয় এবং সমাজ তার কাছে মানসিক পরিপক্কতা আশা করে।
বয়ঃসন্ধিকাল হচ্ছে কৈশোরকালীন শারীরিক পরিবর্তনের প্রক্রিয়া যখন কিশোর-কিশোরীরা যৌন পরিপক্কতা লাভ করে। বয়ঃসন্ধি শারীরিক পরিবর্তনসমূহকে নির্দেশ করে এবং কৈশোরকাল শৈশব ও যৌবনে মানসিক ও সামাজিক পরিবর্তনসমূহকে তুলে ধরে।
জীবনের অন্য সময়ের চেয়ে কৈশোরে সবচেয়ে বেশি মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তন হয়ে থাকে। এ পরিবর্তনগুলো হলো-
- প্রজননতন্ত্রের বৃদ্ধি, যৌন বৈশিষ্ট্য ও আচরণের প্রকাশ এবং পরিপক্কতা
- পূর্ণ মানুষ হিসেবে স্বকীয়তা ও পরিচিতি এবং
- মানসিক ও আর্থ-সামাজিক পরনির্ভরতা থেকে কিছুটা আত্ম-নির্ভরতা
কৈশোরকালীন সময়ে দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি হয়। এই সময়ে তাদের শরীরের আকৃতি ও শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং তারা প্রজননক্ষম হয়। তাদের চিন্তার বিকাশ ঘটে এবং পরিবারের বাইরে বন্ধু-বান্ধব ও অন্যান্যদের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করে। সেই সাথে নতুন জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জিত হয় এবং নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়।
কিশোরদের শারীরিক পরিবর্তন
- উচ্চতা ও ওজন বাড়ে
- বুক ও কাঁধ চওড়া হয়
- হালকা গোঁফের রেখা দেখা দেয়
- গলার স্বর ভেঙে যায় ও ভারি হয়
- অন্ডকোষ ও লিঙ্গের আকার বৃদ্ধি পায়
- লিঙ্গের চারপাশ ও বগলে লোম গজায়
- কখনো কখনো ঘুমের মধ্যে বীর্যপাত হয়
- চামড়া তৈলাক্ত হয়
কিশোরীদের শারীরিক পরিবর্তন
- উচ্চতা ও ওজন বাড়ে
- স্তনের আকার বড় হয়
- গলার স্বর পরিবর্তন হয়
- মাসিক শুরু হয়
- উরু ও নিতম্ব ভারী হয়
- যোনি অঞ্চলে ও বগলে লোম গজায়
- জরায়ু ও ডিম্বাশয় বড় হয়
- চামড়া তৈলাক্ত হয়
কিশোর-কিশোরীদের মানসিক পরিবর্তন
- মনে নানা প্রশ্ন ও কৌতুহল জাগে
- বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে
- লাজুক ভাব দেখা দেয় ও সংকোচ বোধ করে
- নিজের প্রতি অন্যের বেশি মনোযোগ দাবী করে
- আবেগপ্রবণ হয় এবং স্নেহ-ভালোবাসা পেতে চায়
- বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গ এবং তাদের প্রতি নির্ভরতা বাড়ে
- স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে চায়
- বড়দের মতো আচরণ করতে চায়
- ভাবুক ও কল্পনাপ্রবণ হয়
মনে রাখতে হবে : কৈশোরকালীন এইসব পরিবর্তন খুবই স্বাভাবিক। এ পরিবর্তনগুলি নিয়ে লজ্জা, সংকোচ বা দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নাই।
নারী প্রজননতন্ত্রের বিভিন্ন অঙ্গ হচ্ছে :
- ডিম্বাশয়
- ডিম্ববাহী নালী বা ফ্যালোপিয়ান টিউব
- জরায়ু
- জরায়ুরমুখ (সার্ভিক্স)
- যোনিপথ বা সন্তান হবার রাস্তা
পুরুষ প্রজননতন্ত্রের বিভিন্ন অঙ্গ হচ্ছে :
- অ-কোষ
- পুরুষাঙ্গ বা লিঙ্গ
- অ-কোষ থলি
- শুক্রবাহী নালী
- বীর্যথলি
- মূত্রনালী
মাসিক একটি স্বাভাবিক প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একজন নারী গর্ভধারণ/সন্তান জন্মদানের জন্য প্রস্তুত হয়। প্রতিমাসে যোনিপথ দিয়ে মেয়েদের যে রক্তস্রাব হয় তাকে মাসিক/ ঋতুস্রাব বলে। ঋতুস্রাব সাধারণত ৯-১৪ বৎসর বয়সের মধ্যে শুরু হয় এবং ৪৫-৫৫ বৎসর পর্যন্ত প্রতিমাসে একবার করে হতে থাকে। প্রতিমাসেই ১-৭ দিন পর্যন্ত রক্তস্রাব হয়ে থাকে। প্রথম ১-৩ দিন একটু বেশি পরিমাণ রক্ত গেলেও পরবর্তী দিনগুলোতে রক্স্রাবের পরিমাণ কমে আসে।
বয়ঃসন্ধির সময় থেকে মাসিক শুরু হয়। জরায়ুর ভেতরের আবরণের সবচেয়ে বাইরের আবরণটি হরমোনের প্রভাবে প্রতিমাসে বিচ্ছিন্ন হয়, তখন এর নিচে ছোট ছোট রক্তনালীগুলো উন্মুক্ত হয়ে পড়ে এবং রক্তপাত হয়। এই রক্ত ও জরায়ুর বাইরের আবরণের ছেঁড়া ছেঁড়া অংশ যোনিপথ দিয়ে বের হয়ে আসে। সাধারণত প্রতিমাসে ২১-৩৫ দিন অন্তর অন্তর যোনিপথে এই রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে এবং তা ১-৭ দিন পর্যন্ত হতে পারে। এ সময় যদি অস্বাভাবিক ব্যথা বা অস্বস্তিকর কিছু না ঘটে তবে সে তার স্বাভাবিক কাজ-কর্ম চালিয়ে যেতে পারে।
বিস্তারিত জানার জন্য কৈশোর বান্ধব স্বাস্থ্যসেবা প্রশিক্ষণ সহায়িকা দেখুন
- মাসিককালীন সময়ে মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার প্রচুর পরিমাণে খাওয়া প্রয়োজন। কারণ তাদের দেহ থেকে প্রতিমাসে রক্তক্ষরণ হয়। এ ঘাটতি পূরণের জন্য আমিষ (ডাল, সিমের বীচি, বাদাম, দুধ এবং দুধজাতীয় খাদ্য, ডিম, মাছ, মাংস ইত্যাদি); আয়রন (গাঢ় সবুজ শাকসবজি ও ফল, কলিজা ইত্যাদি); ক্যালসিয়াম (দুধ ও দুধজাতীয় খাদ্য, ছোটমাছ ইত্যাদি); ভিটামিন সি (লেবু, আমলকি, পেয়ারা ইত্যাদি) খেতে হবে।
- প্রতিদিন ভালোভাবে গোসল এবং প্রজনন অঙ্গ পানি ও সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
- মাসিকের সময় ঘরে তৈরি পরিষ্কার ন্যাপকিন/কাপড় অথবা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে হবে। কাপড় ব্যবহার করলে ব্যবহারের পর কাপড়টি সাবান ও পানি দিয়ে ধুতে হবে এবং সূর্যের আলোতে শুকিয়ে নিয়ে পরিষ্কার প্যাকেটে পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য রেখে দিতে হবে।
- রক্তস্রাবের পরিমাণ অনুযায়ী স্যানিটারি ন্যাপকিন বা কাপড় দিনে অন্ততপক্ষে ৪ থেকে ৬ বার বদলাতে হবে। একটি প্যাড একবারই ব্যবহার করতে হবে এবং ব্যবহারের পর তা কাগজে মুড়িয়ে ডাস্টবিনে/ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে/গর্তে ফেলতে হবে।
- মাসিকের সময় স্বাভাবিক হাঁটাচলা ও হালকা ব্যায়াম করতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে।
- কৌষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে প্রচুর পানি, শাকসবজি এবং ফলমূল খেতে হবে।
- মাসিক বন্ধ থাকলে, একমাসে ২/৩ বার মাসিক হলে, প্রচুর রক্তক্ষরণ বা প্রচন্ড ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলতে হবে।
ছেলেদের সাধারণত বয়ঃসন্ধির সময় বা ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়স থেকে বীর্যথলিতে বীর্য তৈরি শুরু হয়। অতিরিক্ত বীর্য স্বাভাবিক নিয়মে শরীর থেকে বেরিয়ে আসে। এটাই হচ্ছে বীর্যপাত। ঘুমের মধ্যে এই বীর্য বেরিয়ে আসাকে বলা হয় স্বপ্নে বীর্যপাত যা সাধারণত স্বপ্নদোষ হিসেবে পরিচিত।
স্বপ্নে বীর্যপাত ছেলেদের জন্য একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, এটি কোনো রোগ নয়। কারো স্বপ্নদোষ না হওয়াও কোনো অস্বাভাবিক ব্যাপার নয় এবং এর অর্থ এই নয় যে, তার বীর্য ঠিকমতো তৈরি হচ্ছে না। এজন্য ‘জীবন নষ্ট হয়ে গেছে’ ভেবে মন খারাপ করা কিংবা চিকিৎসার জন্য কবিরাজ/হাতুড়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত নয়
- ছেলেদের স্বপ্নে বীর্যপাত হলে শরীর পরিষ্কার করে কাপড় পরিবর্তন করতে হবে।
- বিষয়টি নিয়ে মন খারাপ না করে নিজেকে বিভিন্ন ধরনের কাজে (পড়াশোনার বাইরে ভালো বই পড়া, খেলাধুলা/ব্যয়াম করা, উন্নয়ন/সেবামূলক কাজ করা, ধর্মীয় কাজ করা ইত্যাদি) সম্পৃক্ত করতে হবে।
- প্রতিদিন গোসলের সময় যৌনাঙ্গ পরিষ্কার করতে হবে। যদি পেনিসের অগ্রভাগে বাড়তি চামড়া থাকে, সেটাও পরিষ্কার করতে হবে।
- প্রতিদিন পরিষ্কার আন্ডারওয়্যার ব্যবহার করতে হবে।
- যৌনাঙ্গ বা মলদ্বারের ভেতরে কোনো ধরনের অপরিষ্কার বস্তু প্রবেশ করানো যাবে না।
- অপরিষ্কার হাতে কখনই নিজের যৌনাঙ্গ ধরা যাবে না।
- কৈশোরকালীন বৃদ্ধির কারণে এসময় ছেলেদের প্রচুর পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে একজন থেকে অন্যজনের মধ্যে যেসব সংক্রমণ ছড়ায় সেগুলোই “যৌনবাহিত সংক্রমণ”।
যৌন সম্পর্ক (যৌনবাহিত সংক্রমন) ছাড়াও -
- সংক্রমিত রক্ত/ রক্তজাত দ্রব্যাদি গ্রহন,
- সংক্রমিত সূঁচ/যন্ত্রপাতি ও
- আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধের মাধ্যমে প্রজননতন্ত্রের সংক্রমন হতে পারে।
প্রজনন অঙ্গসমূহে সংক্রমনকে ’প্রজননতন্ত্রের সংক্রমন’ বলে।
- ব্যক্তিগত অপরিচ্ছন্নতা
- প্রজননতন্ত্রের জীবাণুগুলোর অতিবৃদ্ধি
- অনিরাপদ যৌনমিলন
- জীবাণুযুক্ত পরিবেশ
- সংক্রমিত রক্তগ্রহণ
- সংক্রমিত মায়ের গর্ভধারণ
- যৌনাঙ্গে চুলকানি হওয়া
- যৌনাঙ্গ থেকে দুর্গন্ধযুক্ত বা দুর্গন্ধবিহীন স্রাব যাওয়া
- যৌনাঙ্গ থেকে পুঁজ বা পুঁজের মতো যাওয়া ও বার বার প্রস্রাব হওয়া
- যৌনাঙ্গে ক্ষত হওয়া
- যৌনমিলনে ব্যাথা হওয়া
- শরীরে চুলকানি বা ঘামাচির মত দানা হওয়া
- শরীরে লসিকা গ্রন্থি (কুঁচকি বা অন্যান্য স্থানে গুটি হওয়া) অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যৌনরোগের লক্ষণ বোঝা যায় না। বিশেষ করে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের এই লক্ষণগুলো অপ্রকাশিত থাকে। তাই চিকিৎসা নিতে তারা অনেক দেরি করে ফেলে, যা থেকে জটিলতাও হতে পারে।
১) এইচআইভি সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়; ২) হিউম্যান প্যাপিলমা ভাইরাসে (এইচপিভি) আক্রান্ত নারীদের জরায়ুর মুখে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা থাকে; ৩) সংক্রমিত নারী বা পুরুষের পরবর্তীতে স্থায়ী বন্ধ্যাত্ব হতে পারে; ৪) মস্তিষ্ক, যকৃত বা হৃৎপিন্ডে জটিলতা দেখা দিতে পারে; ৫) সংক্রমিত পুরুষের মূত্রনালী সরু হয়ে যেতে পারে; ৬) আক্রান্ত মায়ের গর্ভপাত হতে পারে বা মৃত সন্তান প্রসব করতে পারে; ৭) আক্রান্ত মায়ের জরায়ুর পরিবর্তে ডিম্বনালীতে ভ্রæণ বড় হতে পারে; ৮) আক্রান্ত মায়ের শিশু জন্মগত ত্রæটি নিয়ে বা চোখে ইনফেকশন নিয়ে জন্ম নিতে পারে, যা থেকে পরবর্তীতে অন্ধত্বও হতে পারে।
চারটি উপায়ে এইচআইভি ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এগুলো হলো-
- এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে অনিরাপদ যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে
- এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তির রক্ত ও রক্তজাত সামগ্রী শরীরে প্রবেশ করলে
- সংক্রমিত সুচ বা অশোধিত সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতির মাধ্যমে
- এইচআইভি আক্রান্ত মা থেকে শিশুর শরীরে
একটি দম্পতি তার আয়ের সাথে ও পারিপার্শ্বিক আর্থ-সামাজিক অবস্থার সাথে সঙ্গতি রেখে কখন ও কয়টি সন্তান গ্রহণ করবে, দু’টি সন্তানের মাঝে বিরতি কতদিনের হবে বা তার পরিবার কত ছোট বা বড় হবে তা ঠিক করা এবং সে লক্ষ্য অর্জনের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা অবলম্বন করাই হলো পরিবার পরিকল্পনা।
কিশোরীবয়সে সে শারীরিক ও মানসিকভাবে সন্তানধারণের জন্য উপযুক্ত থাকে না। এ সময়ে গর্ভধারণ মা ও সন্তান উভয়ের জন্যই অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়েও অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য তারা জানেনা। তাই এ সময়ে যে কারণে পরিবার পরিকল্পনা জানা উচিত তা হলো:
- পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতিসমূহ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা
- অনাকাতি গর্ভধারণ থেকে নিজেকে রক্ষা করা
- অল্পবয়সে বিয়ে হলেও প্রথম সন্তানের জন্ম বিলম্বিত করা
- প্রথম সন্তান হয়ে গেলেও পরবর্তী সন্তানের মাঝে বিরতি দেয়া
- পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতিসমূহ কোথায় পাওয়া যায় তা জানা
- জরুরি গর্ভনিরোধক সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা
পরিবার পরিকল্পনা আধুনিক পদ্ধতিসমূহ
বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম অনুযায়ী যেকোনো সক্ষম দম্পতি আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারেন। যে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ করা হবে সেই পদ্ধতি সেবাগ্রহীতার জন্য উপযুক্ত কিনা তা যাচাই করে গ্রহণ করা উচিত। সাধারণত সেবাদানকারী পদ্ধতি গ্রহণের সময় এ বিষয়ে আলোচনা করবেন। বাংলাদেশে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমে বৈবাহিক অবস্থা এবং সন্তান সংখ্যা বিবেচনা করে পদ্ধতি দেয়া হয়।
স্থায়ী
- মহিলা স্থায়ী পদ্ধতি বা টিউবেকটমি
- পুরুষ স্থায়ী পদ্ধতি বা এনএসভি
অস্থায়ী
স্বল্পমেয়াদি |
দীর্ঘমেয়াদি |
|
|
স্থায়ী |
||
টিউবেকটমি |
তলপেটে ছোট অপারেশনের মাধ্যমে করা হয় |
স্থায়ী |
- কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্যাটেলাইট ক্লিনিক
- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র
- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
- মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ও সদর হাসপাতাল
- মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল
- এনজিও এবং বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র
- ওষুধের দোকান
বাংলাদেশের আইনে বিবাহযোগ্য বয়স মেয়েদের জন্য কমপক্ষে ১৮ ও ছেলেদের, ২১ বছর এর নিচে হলে তা বাল্যবিবাহ।
১) দরিদ্রতা
২) কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার দায়মুক্ত হওয়া
৩) সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা
৪) শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব
৫) মেয়েশিশুর প্রতি অবহেলা বা তাকে বোঝা মনে করা
৬) স্কুল থেকে ঝরে পড়া
৭) বিবাহ আইন সম্পর্কে ধারণা কম থাকা
৮) বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়া
৯) প্রচলিত সামাজিক প্রথা ও কুসংস্কার, এবং
১০) জেন্ডার বৈষম্য
বাল্যবিবাহ কিশোরীর জীবনে চরম বিপদ ডেকে আনে - কারণ, বিয়ের পরপরই কিশোরী গর্ভধারণ করে যা তার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এসময় কিশোরীর নিজেরই শারীরিক বৃদ্ধি অসম্পূর্ণ থাকে যা গর্ভধারণের জন্য উপযুক্ত নয়। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে যা করা উচিত -
- ছেলে-মেয়ে সকলের জন্ম নিবন্ধন করা;
- বিয়ে পড়ানোর সময় কাজি যেন অবশ্যই জন্মসনদ দেখে বিয়ে পড়ান সে ব্যাপারে কাজিকে সচেতন করা;
- বাল্যবিবাহের আইন সম্পর্কে কাজি, অভিভাবক ও জনসাধারণকে সচেতন করা;
- বাল্যবিবাহ ও এর ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি করা;
- বাল্যবিবাহ হলেও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার ও দেরিতে সন্তান গ্রহণে কিশোর-কিশোরী ও অভিভাবকদের সচেতন করা;
- কিশোর-কিশোরীদের জন্য উপযুক্ত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করা;
- ‘বাল্যবিবাহ’ নিয়ে কমিউনিটি পর্যায়ে আলোচনা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করা
- বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ ও বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালা-এর বাস্তব প্রয়োগে সংশ্লিষ্টদের সঠিক দায়িত্ব পালন।
কৈশোরে গর্ভধারণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এ সময় কিশোরীর নিজেরই শারীরিক বৃদ্ধি অসম্পূর্ণ থাকে, তাই তার পুষ্টিসহ শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ তখনও চলতে থাকে। এ অবস্থায় গর্ভধারণ করলে কিশোরী মা ও শিশু উভয়ই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। গর্ভাবস্থায় কিশোরীর সাথে সাথে তার মধ্যে বেড়ে ওঠা সন্তানেরও নানা প্রকার পুষ্টিরদরকার হয়। অথচ এ সকল সেবা এবং পুষ্টি কিশোরীর জন্য সবসময় পাওয়া সচরাচর সম্ভব নয়।
কৈশোরে সন্তান ধারণ এবং জন্মদানের ক্ষেত্রে মা এবং সন্তান উভয়ে কি ধরনের ঝুঁকিতে থাকতে পারে তা নিচে উল্লেখ করা হলোু
- গর্ভজনিত উচ্চ রক্তচাপ;
- গর্ভকালীন রক্তস্বল্পতা;
- প্রি-একলাম্পশিয়া;
- বাধাগ্রস্থ প্রসব;
- মৃত সন্তান প্রসব;
- সময়ের আগে সন্তান জন্মদান;
- কম ওজনের সন্তান জন্ম দেয়া;
- প্রসব পরবর্তী বিষন্নতা;
- অপর্যাপ্ত শিশু পরিচর্যা ও বুকের দুধ
জেন্ডার
জেন্ডার হচ্ছে সমাজকর্তৃক নির্ধারিত নারী ও পুরুষের সামাজিক পরিচয়, তাদের মধ্যকার বৈশিষ্ট্য এবং নারী ও পুরুষের ভূমিকা যা পরিবর্তনীয় এবং সমাজ, সংস্কৃতি ইত্যাদি ভেদে ভিন্ন। অতএব জেন্ডার সামাজিকভাবে নির্মিত একটি বিষয় যা পরিবর্তনশীল।
সেক্স
সেক্স বা লিঙ্গ হচ্ছে প্রাকৃতিক বা জৈবিক কারণে সৃষ্ট নারী-পুরুষের বৈশিষ্ট্যসূচক ভিন্নতা বা শারীরিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে নারী পুরুষের স্বাতন্ত্র্য, কিংবা নারী পুরুষের শারীরিক বৈশিষ্ট্য যা পরিবর্তনযোগ্য নয়।
জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা হলো মেয়েশিশুসহ বিভিন্ন বয়সের নারী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের বিরুদ্ধে সংঘটিত আচার আচরণ যা ব্যক্তির স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে। পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসন, আইনগত বিধান দ্বারা আরোপিত ব্যবস্থায় সর্বক্ষেত্রে শুধুমাত্র নারী বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করার কারণে যেভাবে অর্থনেতিক, সামাজিক, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, আক্রমণ, হুমকি ও আঘাতের শিকার হয় তাই জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা।
১) শারীরিক নির্যাতন
২) মানসিক নির্যাতন
৩) যৌন নির্যাতন
৪) “আর্থিক ক্ষতি”
৫) যৌন হয়রানি
কিশোর-কিশোরীদের প্রতি সহিংসতার বিভিন্ন রূপ
- দৈহিক সহিংসতা
- যৌন সহিংসতা
- মানসিক সহিংসতা
- অর্থনৈতিক সহিংসতা
- সাইবার ক্রাইম
- বুলিং
- বাল্যবিবাহ
- পাচার
- যৌন হয়রানি/ইভটিজিং
- এসিড নিক্ষেপ
- পর্নোগ্রাফি ও অশ্লীল প্রকাশনা
- পতিতাবৃত্তি
- শিশুশ্রম
বুলিং বলতে কাউকে মানসিক বা শারীরিকভাবে হেনস্তা করা বোঝায়। কাউকে অপমান, অপদস্ত করা, কারো সামনে কাউকে হেয় করা, এগুলোই বুলিং। অনেক সময় কাউকে অপদস্ত করাকে অনেকে মজা হিসেবে দেখে, কিন্তু যে ব্যক্তির সাথে মজা করা হয়, তিনি বুলিং এর শিকার হন। উদাহরণ স্বরূপ কারো গায়ের রং, শরীরের গঠন, উচ্চতা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে মজা করা, কাউকে আপত্তিকর ভাষায় ডাকা ইত্যাদি।
সাইবার বুলিং/সাইবার হয়রানী বলতে বোঝায় কাউকে ইলেকট্রনিক মাধ্যমের সহায়তায় বুলিং করা। এটাকে আজকাল অনলাইন বুলিংও বলা হয়। কিশোর বয়সের ছেলেমেয়েদের মধ্যে আজকাল এই সমস্যাটা খুব বাড়ছে। এটা হতে পারে মিথ্যা প্রচারনামূলক, হুমকি, যৌন হয়রানী করা, যার পেছনের উদ্দেশ্য থাকে কারো ক্ষতি করা।
২০১৬ সালে বিশ্বখ্যাত টেলিনর গ্রূপের করা এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশের স্কুলে যাওয়া শিশুদের প্রায় ৪৯% নানা ধরণের বুলিংয়ের শিকার হয়। সবচেয়ে আশংকার ব্যাপার হলো, এর মধ্যে ২৯% শিশু সাইবার বুলিংয়ের কারণে বিষণèতায় ভোগে।
১) ফেসবুক
২) হোয়াটস্ অ্যাপস
৩) ইমো
৪) ভাইবার
৫) ম্যাসেন্জার ইত্যাদি
১) হতাশা
২) উদ্বেগ
৩) ঘুম ও খাদ্যাভাসে পরিবর্তন
৪) নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার কথা বলা
৫) অন্যদের থেকে নিজেকে বিচ্ছিনড়ব করে রাখা
৬) আত্মহত্যার ঝুঁকি
১) অপরিচিত কারও সাথে অনলাইনে বন্ধুত্ব বা অন্য কোন সুসম্পর্কে না জড়ানো
২) অপরিচিত কারও সাথে অনলাইনে কোন ধরণের ব্যক্তিগত মেসেজ দেয়া থেকে বিরত থাকা
৩) বিরক্তিকর ব্যক্তিকে ব্লক করে দেওয়া
৪) সাইবার বুলিং নিয়ে বিশ্বস্ত কাউকে জানানো
৫) অন্যান্য শিক্ষার্থী, শিক্ষকশিক্ষিকা এবং স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানানো এবং সাইবার বুলিং প্রতিরোধে নিয়মনীতি
৬) প্রণয়ন করা
৭) সাইবার বুলিং প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানো
১) পারিবারিক ও বন্ধুবান্ধবের মধ্যকার বন্ধন জোরদার করা।
২) সন্তান ও বাবা-মা/অভিভাবকের মধ্যে নিরাপদ, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি।
৩) শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জীবনমুখী প্রশিক্ষণ, যেমন: কীভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা যাবে, রাগ নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক দক্ষতা বিকাশ প্রশিক্ষণ, কীভাবে বাবা-মা ও বন্ধুদের সাথে দ্ব›দ্ব কাটানো যাবে, কম্পিউটার ও কারিগরি প্রশিক্ষণ ইত্যাদি।
৪) মাদকের অপব্যবহার ও সহজলভ্যতা হ্রাস।
৫) জেন্ডার বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে বিবিধ সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা।
৬) নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা দমন আইন সম্পর্কে জনগণ ও জনপ্রশাসনকে সোচ্চার করা।
৭) সমাজে বেকারত্ব হ্রাস, দারিদ্র বিমোচন করার লক্ষ্যে ক্ষুদ্রশিল্প প্রশিক্ষণ এবং সহজ শর্তে ঋণ প্রদান।
এটি একটি ‘ক্রনিক রিল্যাপ্সিং ব্রেইন ডিজিজ’ বা পুনরায় হতে পারে এমন দীর্ঘমেয়াদি মস্তিষ্কের রোগ। ক্রমাগত মাদক নিতে নিতে এক পর্যায়ে ব্যক্তিটি পুরোপুরি মাদকনির্ভর হয়ে পড়ে ও মাদক ছাড়া চলে না। এই অবস্থাই হচ্ছে মাদকে আসক্তি।
- মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতা
- মাদকদ্রব্য সমন্ধে কৌতূহল
- বন্ধুদের চাপে পড়ে মাদক গ্রহণ
- হতাশা, ব্যর্থতার কাটাতে মাদক গ্রহণ
- পারিপার্শিক পরিবেশের প্রভাব
- নিছক আনন্দের জন্য
মাদকাসক্তির লক্ষণসমূহ
- দৈনন্দিন এবং সাধার কাজকর্ম থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া
- সময়মত কাজ সম্পন্ন করতে না পারা
- মানসিকতার দ্রুত পরিবর্তন হয়
- প্রচুর মিথ্যা কথা বলা
- কথায় কথায় অন্যদেরকে দোষারোপ করা
- দৈনন্দিন কাজে আগ্রহের অভাব
- কথায় অসংলগ্নতা
- অন্যদের সাথে যোগাযোগ করার দক্ষতার অভাববিরক্তি
- কথা দিয়ে কথা না রাখা
- অপরাধবোধ
- আবেগের অস্থিতিশীলতা (হঠাৎ খুব রেগে যাওয়া)
- ঘম ঘম ভাব/ঝিম ধরা ভাব
- অতিরিক্ত কথা বলা অথবা একেবারেই কথা না বলা
- ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন
- আচরনের জন্য কার দর্শানো
- উদ্বিগ্নতা (Anxiety)
- বিষন্নতা (Depression)
- একা থাকা ইত্যাদি
মাদকাসক্ত ব্যক্তি মনে করে তারা মাদককে খব সহজেই ছেড়ে দিতে পারবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, মাদকদ্রব্য সেবনের ফলে, মাদকের প্রতি তীব্র আকর্ষ সৃষ্টি হয় তাই তারা মাদকদ্রব্য ছাড়তে পারেনা। ফলে তাদের মাদকদ্রব্য গ্রহরে পরিমাণ দিনে দিনে বৃদ্ধি পায়। কোন কারে মাদকদ্রব্য সেবন করতে না পারলে, মাদকের অভাবে বিভিন্ন ধরণের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়।
- যেসব বন্ধুরা মাদক গ্রহে উৎসাহ যোগায় অথবা সহযোগিতা করে তাদের থেকে দূরে থাকা
- কোন কারে মন খারাপ থাকলে Relaxation Exercise করা (Reference : মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনার Relaxation Exercise)
- যেসব ছাত্রছাত্রী একবার অথবা একাধিকবার কিছুটা মাদক নিয়েছে যেমন কোন ছাত্রছাত্রী হয়তোবা কখনও সিগারেট খেয়েছে এবং এখন তার আবার খেতে ইচ্ছে করছে সেই মহূর্তে সে পানি, চকলেট বা অন্য কিছু খেতে পারে
- মাদক কে “না” বলা
- নিজের সাথে প্রতিজ্ঞা করা
১) আমরা নিজেকে ভালোবাসব
২) আমরা পরিবার, সমাজ ও দেশের একজন গুরুত্বর্পূ মানষ হিসেবে অবদান রাখার জন্য আজ থেকে আমরা সবাই মাদককে “না” বলবো
৩) “আমরা কখনই মাদক গ্রহ করবোনা, আমরা কখনই মাদক গ্রহ করবোনা, আমরা কখনই মাদক গ্রহণ করবোনা ” (সবাই মিলে একসাথে তিনবার বলবে)
স্বাস্থ্যসেবা জোরদার করার লক্ষ্যে সেবাদানকারী এবং মাঠকর্মীর মধ্যে কৈশোরকালীন বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে একই রকম ধারণা এবং জ্ঞান বিস্তারের জন্য এই পুস্তিকা প্রনয়ন করা হয়েছে। চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর প্রোগ্রাম (২০১৭-২০২২) এর আওতাধীন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর সংশ্লিষ্ট অপারেশন প্লানের বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে কৈশোর-বান্ধব স্বাস্থ্যসেবা বাস্তবায়িত হচ্ছে।
ইউএসএআইডি’র আর্থিক সহায়তায় পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনালের ”সুখী জীবন” প্রকল্পের মাধ্যমে কৈশোর এবং যুব-বান্ধব সেবাকে গতিশীল করার লক্ষ্যে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর সাথে একযোগে কাজ করছে। এ কাজের ধারাবাহিকতার অংশ হিসাবে ”জানতে চাই, জানাতে চাই” পুস্তিকাটি তৈরি করা হয়েছে।
Attached File : 1618203896_জানতে_চাই,_জানাতে_চাই.pdf